নারায়ণগঞ্জ

সন্ত্রাসীদের পিটুনির হাত থকে বাচঁতে কিশোর তানভীরের আত্নহত্যা

ফতুল্লায় গেমস থেকে ভিডিও আপলোড করে ফেসবুকের নিজ স্টোরিতে “ফাস্ট টাইম মেশিন চালাইলাম” লেখা সেই কিশোর তানভীর (১৭) এবার সন্ত্রাসীদের পিটুনির হাত থকে বাচঁতে আত্নহত্যার পথ বেছে নিলেন।
মঙ্গলবার (২৩ নভেম্বর) বিকেলে তিনি নিজ ঘরের সিলিং ফ্যানের সাথে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্নহত্যা করে।

নিহত তানভীর জামালপুর জেলার মেলান্দ থানার টঙ্গীবাড়ীর নজরুল ইসলামের পুত্র ও ফতুল্লা থানার দাপা কবরস্থান সড়কের কুদ্দুস মিয়ার বাড়ীর ভাড়াটিয়া। পুলিশ  লাশ উদ্ধার করে নিয়ে আসার সময় উত্তেজিত জনতা মমিন নামক এক সন্ত্রাসীকে গণপিটুনি দেয়। এ সময় পুলিশ মারমুখী জনতার হাত থেকে মমিনকে উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসে।

নিহত তানভীরের মা পারভীন জানায়, মঙ্গলবার দুপুর দেড়টার দিকে  স্থানীয় সন্ত্রাসী মিল্লাত বাহিনীর সদস্য  কামরুল, জনু, সজীব, জামাই শাকিল, রাসেল, লিমন, মমিনসহ বেশ কয়েক সন্ত্রাসী তার পুত্রকে রাস্তা থেকে তুলে নিয়ে  চন্দ্রাবাড়ীর ভিতরে নিয়ে গিয়ে মারধর করে।

একপর্যায়ে সন্ত্রাসীরা নিহত তানভীরকে ছেড়ে দেয়। পরে বাসায় ফিরে এলে সন্ত্রাসীরা পুনরায় তানভীরকে ফোন করে জানায় যে তাকে পেলে রাস্তায় পেলে আবারো  পিটুনি দেওয়া হবে। এ ঘটনা তানভীর তার মাকে জাানিয়ে নিজ ঘরে প্রবপশ করে।

নিহতের মা  আরো জানায়  এই ভয়ে পরিবারের সদস্যদের অলক্ষ্যে তানভীর নিজ ঘরে প্রবেশ করে সিলিং ফ্যানের সাথে গলায় ফাসঁ দিয়ে আত্নহত্যা করে।

নিহতের বাবা চা দোকানী নজরুল জানায়, তার ছেলে তার সাথে চায়ের দোকানে বসতো। এক সময় নিহত তানভীর অভিযুক্তদের সাথে চলাফেরা করতো। কিন্তু কয়েক মাস পূর্বে একটি অস্ত্র চালানোর গেমস  ভিডিও আপলোড করে নিজ ফেসবুকে (ফাস্ট টাইম মেশিন চালালাম) আপলোড করে পোস্ট দেয়ায় পুলিশ তাকে গ্রেপ্তার করে।

এরপর থেকে তানভীর তার সাথেই চায়ের দোকানে বসতো। মঙ্গলবার দুপুরে তাকে তার স্ত্রী ফোন করে জানায় তানভীরের এক সময়ের সহোযোগিরা তানভীরকে মারধর করেছে এবং আবারো মারধর করবে। এই ভয়ে তানভীর আত্নহত্যা করেছে।

ঘটনার বিষয়টি নিশ্চিত করে ঘটনাস্থলে যাওয়া ফতুল্লা মডেল থানার উপপরিদর্শক শাহাদাত হোসেন জানান, সংবাদ পেয়ে তিনি ঘটনাস্থলে গিয়ে লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য হাসপাতালে পাঠিয়েছেন। ঘটনাস্থলে উপস্থিত উত্তেজিত জনতা মমিন নামক এক সন্ত্রাসী কে চন্দ্রাবাড়ী থেকে আটক করে গণপিটুনি দেয়। পরে তিনি উত্তেজিত জনতার হাত থেকে মমিনকে উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসেন।

উল্লেখ্য যে, চলতি বছরের মার্চ মাসের ২২ তারিখে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকের স্টোরিতে বন্দুক দিয়ে গুলি চালানোর একটি ভিডিও শেয়ার করে নিহত তানভীর। ভিডিওটি মুহুর্তে ছড়িয়ে পড়ায় পুলিশের নজরে আসে ওই কিশোর। এ ঘটনায়  (২৩ মার্চ) ফতুল্লা রেল স্টেশন এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়েছিলো তানভীরকে।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: Content is protected !!
Close