জাতীয়

যশোরে হবে ইপিজেড

ভবদহ পানি নিষ্কাশন সংগ্রাম কমিটি ও স্থানীয় ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, যশোর সদর, অভয়নগর, মনিরামপুর ও কেশবপুর উপজেলার মধ্যবর্তী স্থানে ভবদহ এলাকা। ভবদহ বিল পাড়ের ১২০ গ্রামের অন্তত ৫ লাখ মানুষ স্থায়ী জলাবদ্ধতার শিকার হয়েছে। ওই এলাকার প্রায় প্রতিটি বাড়ির উঠানে এখন পানি আছে। কেশবপুর মনিরামপুর ও অভয়নগর উপজেলার অন্তত ৪৫টি স্কুল-কলেজ পানিতে ভাসছে। এলাকার কবরস্থান ও শ্মশানঘাটে পানি। যে কারণে ওই এলাকায় মানবিক বিপর্যয় দেখা দিয়েছে।

প্রেমবাগ ইউনিয়ন পরিষদের ৪ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য ও বনগ্রামের বাসিন্দা আসাদুজ্জামান বলেন, ভবদহের স্লুইসগেট গেটে পলি জমে পানিনিষ্কাশনের পথ বন্ধ হয়ে গেছে। যে কারণে ধলের বিলসহ দক্ষিণের প্রায় ২৭টি বিলের পানি জমে আছে। এসব বিলপাড়ের মানুষ অত্যন্ত মানবেতর জীবনযাপন করছে। কৃষিজমি পানির নিচে থাকায় হাজার হাজার মানুষ বেকার হয়ে পড়েছে। বিলে বড়শি দিয়ে মাছ শিকার করে, শাপলা ও কলমি শাক তুলের হাটেবাজারে বিক্রি করে কোনোরকমে মানুষ দিনযাপন করছেন। এই এলাকায় ইপিজেড স্থাপিত হলে লাখো মানুষ কাজ পাবে। ইপিজেডের কারখানা মালিকেরাও সস্তায় শ্রমিক পাবেন। এতে উভয় লাভবান হবে।

প্রেমবাগ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মফিজ উদ্দীন বলেন, যুগ যুগ ধরে যশোরের দুঃখ হয়ে আছে ভবদহ। বিলপারের মানুষ বছরের পর বছর ধরে ক্ষতিগ্রস্ত। তাঁদের পিঠ দেয়ালে ঠেকে গেছে। এখন ইপিজেড স্থাপিত হলে এই এলাকার অর্থনীতির চাকা আবার সচল হবে।

ভবদহ এলাকার পানিনিষ্কাশনের জন্য দুটি কমিটি আন্দোলন সংগ্রাম করে আসছে। কমিটির নেতাদের দাবি, কোনো বড় প্রকল্প স্থাপন করার পূর্বশর্ত হলো, স্থানীয় জনগণের মতামত নেওয়া। কিন্তু এই প্রকল্প বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে এখনো স্থানীয় জনগণের জনমত জরিপ করা হয়নি।স্থানীয় জনগণের মতামত নেওয়া হয়েছে কি না জানতে চাইলে যশোরের জেলা প্রশাসক তমিজুল ইসলাম খান বলেন, ভবদহ এলাকায় ইপিজেড স্থাপনের বিষয়ে স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও জনগণ অবহিত আছেন।

ভবদহ পানি নিষ্কাশন সংগ্রাম কমিটির প্রধান উপদেষ্টা ইকবাল কবির বলেন, ইপিজেড স্থাপন করা হলে জেলার অর্থনৈতিক উন্নতি হবে। তবে এর সঙ্গে জনগণের ভূমি অধিগ্রহণ, ক্ষতিপূরণ, পরিবেশ-প্রতিবেশসহ নানা ধরনের বিষয় জড়িত থাকে। এসব বিষয়ে স্থানীয় জনগণের মতামত নেওয়া হয়নি।

ইপিজেড স্থাপনের অগ্রগতির বিষয়ে জানতে চাইলে প্রকল্প পরিচালক আশরাফুল কবীর বলেন, যশোর ইপিজেড স্থাপনের জন্য ৫০৩ একর ভূমি অধিগ্রহণের জন্য যশোর জেলা প্রশাসককে বলা হয়েছে। প্রকল্পের ডিপিপি তৈরির কাজ চলছে। যশোর ইপিজেড, চট্টগ্রাম ও ঢাকার সাভারের ইপিজেডের মতোই হবে। এলাকার মানুষের জীবনযাত্রার ব্যাপক উন্নতি ঘটবে। কমপক্ষে দেড় লাখ মানুষের কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হবে।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: Content is protected !!
Close