এ বছর শীতের শুরু থেকে নদী ও খাল-বিলের পানি কমে যাওয়ায় নারায়ণগঞ্জে সব ধরনের মাছের সরবরাহ বেড়েছে। ফলে পাইকারি মাছ বাজারে দামও আগের তুলনায় কমেছে। বাজারের প্রতিটি আড়তে নদী ও হাওড় অঞ্চলের ফরমালিনমুক্ত তাজা মাছে ভরপুর রয়েছে।
ছুটির দিন ছাড়াও প্রতিদিন অন্তত দেড় থেকে দুই কোটি টাকার মাছ বিক্রি হচ্ছে পাইকারি বাজারে। নদীবন্দর সংলগ্ন শীতলক্ষ্যা নদীর পূর্বতীরে ৩ নম্বর ঘাট এলাকায় সদর উপজেলার সবচে বড় মাছের পাইকারি বাজার। ভোর থেকে শুরু হয় আড়তদারদের হাঁকডাক ও বেচাকেনা।
.রুই, কাতল, বোয়াল, ব্রিগেট, পাঙাশ, আইড়, কোরাল, রিটা, গজার, শোল ও গলদা চিংড়িসহ নদীর ছোট বড় সব ধরনের তাজা মাছ উঠেছে বাজারে। পাশাপাশি হাওর অঞ্চলের নানা প্রজাতির দেশি ও সমুদ্রের মাছও পাওয়া যায়। বিশেষ করে দেড় থেকে দুই কেজি ওজনের পদ্মার তাজা ইলিশে বাজার ভরপুর। প্রতিদিন ভোর ৫টা থেকে সকাল ১১টা পর্যন্ত ক্রেতা-বিক্রেতাদের পদচারণায় জমজমাট থাকে প্রায় ২০০ বছরের প্রাচীন এ বাজারটি। সরবরাহ বাড়ায় সব ধরনের মাছের দাম কেজিপ্রতি ১০০ টাকা কমেছে। মূলত এ বাজার থেকেই নগরীর অন্যান্য বাজারগুলোতে মাছ সরবরাহ হয়ে থাকে। দামে যেমন সাশ্রয়, তেমনি ফরমালিনমুক্ত। এ ছাড়া বাজারেই কাটার ব্যবস্থা থাকায় ক্রেতারাও অধিক পরিমাণে মাছ কিনছেন।
একনজরে মাছের দাম তুলে ধরা হলো: দেশি রুই কেজিপ্রতি ২২০-৪৫০ টাকা, দেশি কাতল কেজিপ্রতি ২০০-৫০০, নদীর পাঙাশ কেজিপ্রতি ৬৫০-৭০০ টাকা, নদীর বোয়াল কেজিপ্রতি ৬০০-৮০০ টাকা। তেলেপিয়া কেজিপ্রতি ১১০-১২০ টাকা, গলদা চিংড়ি কেজিপ্রতি ৬০০-১,০০০ টাকা, ব্রিগেট কেজিপ্রতি ১৮০-২০০ টাকা, রিঠা কেজিপ্রতি ৫০০-৬০০ টাকা। কোরাল কেজিপ্রতি ৩০০-৬০০ টাকা, কারফিউ কেজি প্রতি ২০০-৪০০ টাকা, শোল কেজিপ্রতি ৩০০-৭০০ টাকা, ইলিশ কেজিপ্রতি ৬৫০-১২০০ টাকা, আইড় কেজি ৯৫০-১১০০ টাকা, ভাটা কেজিপ্রতি ১৩০-১৬০ টাকা, বিভিন্ন ধরনের ছোট মাছ কেজিপ্রতি ১৫০-৬০০ টাকা
পছন্দমতো তাজা মাছ কিনতে পুরুষদের পাশাপাশি নারীরাও মাছ কিনতে আসেন এ বাজারে।
নৌপথে পরিবহনের সুবিধার কারণে ব্রিটিশ আমলে নারায়ণগঞ্জ নদীবন্দরকে কেন্দ্র করে এ মাছ বাজারটি প্রতিষ্ঠিত হয়। শতাধিক আড়তদার ও সহস্রাধিক পাইকারি ব্যবসায়ী বংশপরম্পরায় ব্যবসা পরিচালনা করছেন এখানে। এ ছাড়া হাজারের বেশি মৎসজীবী শ্রমিক কর্মচারী পেশাগতভাবে যুক্ত রয়েছেন।
