জাতীয়

বগুড়ায় বাংলাদেশ কৃষক-মজুর সংহতির দুই দিনব্যাপী কেন্দ্রীয় ২য় প্রতিনিধি সভা অনুষ্ঠিত

 

সারাদেশে কৃষক-মজুর সংহতির সাংগঠনিক কার্যক্রম পূর্ণগঠন এবং দেশের কৃষক-মজুরের স্বার্থে কৃষি অর্থনীতির নীতি-কাঠামো নিয়ে আলোচনা এবং ২য় কেন্দ্রীয় সম্মেলন প্রস্তুতি কমিটি গঠনের লক্ষ্যে বগুড়ার চারমাথা বাসস্ট্যান্ড সংলগ্ন সেঞ্চুরি মোটেলে দুই দিনব্যাপি কেন্দ্রীয় ২য় প্রতিনিধি সভা অনুষ্ঠিত হয়। ২৪ জুন সকাল ১০ টায় এই সভাটি শুরু হয় এবং আজ ২৫ জুন বেলা ২ টায় সমাপ্ত হয়।

উক্ত সভায় সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ কৃষক-মজুর সংহতির আহ্বায়ক দেওয়ান আবদুর রশিদ নিলু। ২য় প্রতিনিধি সভায় সারাদেশ থেকে বাংলাদেশ কৃষক-মজুর সংহতির সংগঠকবৃন্দ অংশগ্রহণ করেন।

সভার প্রথম অধিবেশনে সভাপতির পদ অলংকরণ করেন প্রবীণ কৃষকনেতা নাজার আহমেদ। এছাড়াও সভায় গুরুত্বপূর্ণ মতামত প্রদান করেন সাবেক কৃষক ফেডারেশনের এবং বর্তমান বাংলাদেশ কৃষক-মজুর সংহতির কেন্দ্রীয় নেতা বীর মুক্তিযোদ্ধা এস এম আমজাদ হোসেন, কৃষকনেতা কেরামত আলী, আলীম মোল্লা, আব্দুল আলিম, মিজানুর রহমান মোল্লা, আব্দুর রশিদ, মোকাদ্দেছ শিকদার, মোতাহার হোসেন, কামরুল হাসান লিটন প্রমুখ।

এছাড়াও সভায় উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ ছাত্র ফেডারেশনের সাবেক সভাপতি গোলাম মোস্তফা, বাংলাদেশ ছাত্র ফেডারেশনের সহ-সভাপতি ছাত্রনেতা সাদিক রেজা।

বাংলাদেশ কৃষক-মজুর সংহতির ২য় প্রতিনিধি সভার প্রথম দিনের প্রথম পর্বে ভারতীয় উপমহাদেশে ব্রিটিশ শাসন থেকে শুরু করে বর্তমান বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠা পরবর্তী সাম্প্রতিক সময় পর্যন্ত কৃষক আন্দোলনের ইতিহাস পর্যালোচনা এবং বাংলাদেশ কৃষক-মজুর সংহতি প্রতিষ্ঠার প্রেক্ষাপট নিয়ে আলোচনা করা হয়।
সভার প্রথম দিনের দ্বিতীয় পর্বে বর্তমান কৃষক রাজনীতির পরিস্থিতি এবং সাংগঠনিক পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা করা হয়ে।

সভায় উপস্থিত প্রতিনিধিদের মতামতের ভিত্তিতে দেওয়ান আবদুর রশিদ নীলুকে আহ্বায়ক, নাজার আহমেদ ও কেরামত আলীকে যুগ্ম আহ্বায়ক, জোনায়েদ সাকিকে সদস্য সচিব ও আব্দুল আলীমকে যুগ্ম সদস্য সচিব করে বাংলাদেশ কৃষক-মজুর সংহতির ৪৬ সদস্য বিশিষ্ট ২য় সম্মেলন প্রস্তুতি কমিটি গঠন করা হয়।

সভার ২য় দিনে অনলাইনে যুক্ত হয়ে বাংলাদেশ কৃষক-মজুর সংহতির সদস্য সচিব জননেতা জোনায়েদ সাকি সংগঠনের ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা ও কর্মসূচি বিষয়ে দিকনির্দেশনামূলক বক্তব্য রাখেন। শারীরিক অসুস্থতার কারণে তিনি এই সভায় স্বশরীরে উপস্থিত থাকতে পারেন নি।

জোনায়েদ সাকি বলেন, কৃষকরাই দেশের চালিকা শক্তি। কৃষকরা পরিশ্রম করে আঠারো কোটি মানুষের খাবার যোগায়। অথচ জাতীয় বাজেটে সরকারের সকল নীতি পরিকল্পনায় কৃষক এবং কৃষিখাত থাকে উপেক্ষিত। বর্তমান সরকার গণমানুষের স্বার্থ, অধিকার এবং সুবিধা-অসুবিধার কথা ভাবেন না। সরকার সিন্ডিকেট ও লুটেরাদের স্বার্থ রক্ষা করতে ব্যস্ত। গণমানুষকে তার যাবতীয় অধিকার পেতে হলে গণমানুষের স্বার্থরক্ষাকারী দলের নেতৃত্বে নতুন সরকার প্রতিষ্ঠা করতে হবে। আমরা সেই লক্ষ্যে কৃষক, শ্রমিকসহ মেহনতী গণমানুষের পক্ষে লড়াই করছি। সেই লড়াই-সংগ্রামে বাংলাদেশ কৃষক-মজুর সংহতি আগামীতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।

সভার সমাপনী বক্তব্যে বাংলাদেশ কৃষক-মজুর সংহতির আহ্বায়ক দেওয়ান আব্দুর রশিদ নীলু বলেন, “কৃষি ও বাজার ব্যবস্থা কৃষকের হাতে নাই। এখন বাজার ব্যবস্থা ও কৃষি বহুজাতিক কর্পোরেট পুঁজির ও লুটেরা শ্রেণির হাতে জিম্মি। সরকারি কৃষি অফিসাররা উৎপাদন বৃদ্ধির জন্য কৃষকদের পরামর্শ দেন কিন্তু উৎপাদিত ফসল লাভজনক দামে বিক্রয়ের ব্যাপারে তাদের কোন উত্তর নাই। কৃষিনীতি খোদ কৃষকের স্বার্থে গ্রহণ করা হয় না। বাংলাদেশ কৃষক-মজুর সংহতি কৃষিকে প্রাণ-প্রকৃতির এবং কৃষকের স্বার্থে ঢেলে সাজানোর জন্য সংগ্রাম করছে। আগামীতে এই লড়াই সংগ্রাম আরও বেগবান করতে আমরা এই প্রতিনিধি সভা করছি।’’

 

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: Content is protected !!
Close